গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন সম্পর্কিত সিদ্ধান্তের বিষয়ে একক অবস্থান প্রকাশ করে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। দলটি উল্লেখ করে, একজন উপদেষ্টা রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ আইনগত পরামর্শদাতা, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নয়। অতএব, কোনও নির্দিষ্ট দলের পক্ষে এককভাবে আশ্বাস প্রদান করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করবে। শনিবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে পার্টির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। চিঠিতে বলা হয়, আইন সংশোধনের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া কোনও ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক ও জনস্বার্থের ভিত্তিতে গঠিত প্রক্রিয়া। ফলে, সরকারের পক্ষ থেকে কোনও নির্দিষ্ট দলের দাবির প্রতি একমত হওয়া জনমতকে দুর্বল করবে এবং সরকারের নিরপেক্ষতার উপর সন্দেহ সৃষ্টি করবে। আরও উল্লেখ করা হয়, উপদেষ্টা নির্বাচনের প্রক্রিয়া সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের বিপরীতে যে অবস্থান নিয়েছেন, তা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। পার্টির মতে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করলে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হয় এবং নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়। এতে ভোটাররা বুঝতে পারেন না, তারা আসলে কোন দলের বা নীতির প্রতি ভোট দিচ্ছেন, যার ফলস্বরূপ দায়বদ্ধতার সম্পর্ক ক্ষুণ্ণ হয়। চিঠিতে বলা হয়, এই বিধান বড় দলের জন্য সুবিধাজনক ব্যবস্থা সৃষ্টি করে। তারা ছোট ছোট ‘প্রক্সি দল’ গড়ে নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন করে, যা গণতান্ত্রিক বৈচিত্র্য ক্ষুণ্ণ করে এবং প্রকৃত মতামত প্রকাশের পথ সংকুচিত করে। পার্টি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত জানিয়ে বলে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ২০ অনুচ্ছেদে সংশোধন আনা উচিত— যেন কোনও নিবন্ধিত দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে না পারে। পার্টির মতে, এ ধরনের সংশোধন প্রকৃত গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদকে শক্তিশালী করবে এবং প্রতিটি দলকে নিজেদের নীতি, নেতৃত্ব ও দায়িত্ব গ্রহণের সুযোগ করে দেবে। চিঠির শেষে দলটি সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছে।