বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ উল্লেখ করেছেন, গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান বা আইন সংশোধন সম্ভব নয়। এর জন্য প্রথম শর্ত হলো জাতীয় সংসদের পুনর্গঠন। শুক্রবার ঢাকা শহরের শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘নারীর ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও অসম্মান’ শীর্ষক মৌন মিছিল ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নারীদের অধিকার ও শিশু অধিকার ফোরাম এই কর্মসূচির আয়োজন করে। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ও জুলাই মাসে জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই সনদের যে শর্তগুলো সই হয়েছে, বিএনপি তা মানতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে অন্যান্য প্রস্তাব যদি জনগণের দ্বারা চাপিয়ে দেওয়া হয়, সেটি জনগণই বিবেচনা করবে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্ব যে কোনো পরিস্থিতিতেই রক্ষা করতে হবে। কোনো অপ্রয়োজনীয় আইন, আদেশ বা জবরদস্তিমূলক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সংসদে হস্তক্ষেপ হলে বিএনপি তা মেনে নেবে না। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর নারীরা তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা ফিরে পাবেন বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু এখনো নারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে ঘরে ফেরানোর চেষ্টা চলছে, যা উদ্বেগজনক। তাই নারীদের আরও সোচ্চার হয়ে অধিকার আদায়ের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী সমাবেশ পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, নারীর অধিকার নিয়ে সংকট সৃষ্টি হলে দেশের নারী সমাজ একযোগে প্রতিবাদে রুখে দাঁড়াবে। পিএসসির সদস্য চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস বলেন, নারীরা ঘরে থাকবেন নাকি বাইরে কাজ করবেন—এটি তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সমাজ বা রাষ্ট্রের দয়া–দাক্ষিণ্যের উপর নারীদের অধিকার নির্ভর করে না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাহরীন ইসলাম খান বলেন, নারীর পাশাপাশি অনেক পুরুষও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হন। তিনি আরও বলেন, যে জুলাই সনদে নারীর সুরক্ষা ও অধিকার বিষয়ক কিছু নেই, তা নারীরা প্রত্যাখ্যান করছেন। প্রকৃত উন্নয়ন তখনই হবে, যখন নারী রাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবে। ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের সমন্বয়কারী সানজিদা ইসলাম বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পরিবর্তন আসলেও বর্তমানে নারীরা সামাজিক বৈষম্য ও কর্মঘণ্টা সংকোচনের মতো হুমকির মুখে পড়ছেন। সমাবেশে ডাকসুর গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক সানজিদা আহমেদ তন্বি বলেন, নানা ক্ষেত্রেই নারীরা কথা বলতে গেলে ব্যক্তিগত বা মতাদর্শিক কারণে হয়রানির শিকার হন। সহিংসতা রোধে নারীদের আরও বেশি করে কথা বলতে হবে।