, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ভরা মঞ্চে তরুণীর হিজাব টেনে খুলে বিতর্কে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী Logo ১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৭০ কোটি ডলার Logo জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা Logo হাদিকে গুলি: মূল অভিযুক্ত ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গ্রেপ্তার Logo সাংবাদিক আনিস আলমগীরের গ্রেপ্তারে সম্পাদক পরিষদের নিন্দা Logo পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়নপত্র কিনলেন সারজিস আলম Logo সিইসির সেই বিতর্কিত বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলো ইসি Logo কালই বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ মোবাইল ফোন, নতুন সিদ্ধান্ত সরকারের Logo এমপি প্রার্থী ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সে নতুন নীতিমালা Logo গরুর সঙ্গে অটোরিকশার ধাক্কা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গ্রামের সংঘর্ষ
নোটিশ :
সংবাদের বিষয়ে কিছু জানাতে ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়

বিএনপি মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেছে, কিন্তু ভেঙে যায়নি: তারেক রহমান

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

High court notice in front of Tarek's house, notice in newspaper

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান উল্লেখ করেছেন, বিএনপি গভীর ক্ষতি সহ্য করলেও কখনো ভেঙে পড়েনি। বরং সত্য, ন্যায়ের পথে থাকা, জবাবদিহি, পুনর্মিলন ও আইনের শাসনে আস্থা রেখে আরও শক্তিশালী হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, আমরা একটি এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের কণ্ঠ, অধিকার ও জীবন মূল্যবান; যেখানে মানবাধিকারই আমাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মানবাধিকার দিবসের উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক বার্তায় এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ষোলো বছর ধরে বাংলাদেশ যেন এক অন্ধকারের নিচে চাপা ছিল। কেউ সেই অন্ধকারের তীব্রতা অনুভব করেছে, কেউ চুপচাপ জীবন কাটিয়েছে। তবে যারা তখনকার পতিত সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তাদের জন্য এই অন্ধকার ছিল খুবই সাধারণ বিষয়। রাতে দরজায় কড়া নাড়ার মতো ঘটনা, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, ভয়াবহতা আর পরিবারগুলো অপেক্ষা করেছে তাদের প্রিয়জনদের জন্য, যারা কখনো ফিরে আসেনি, যোগ করেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, এই বোঝা বিএনপির চেয়ে বেশি কেউ বহন করেনি। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, হেফাজতে মৃত্যু, মিথ্যা মামলা— এসবের মধ্যে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বিএনপির ঘরে রক্তের ঝরনাও বেশি পড়েছে। তবে শুধু বিএনপি নয়, ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক, সাধারণ মানুষ— সবাই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছেন। মৌলিক মানবাধিকার যেমন মর্যাদা, নিরাপত্তা ও মত প্রকাশের অধিকার অনেকটাই হুমকির মুখে পড়েছিল। তিনি আরও বলেন, এই সময়গুলোতে আমি নিজেও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ২০১৫ সাল থেকে আমার কথা বলার অধিকার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেশের কোনো পত্রিকা, টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যেন আমার বক্তব্য প্রকাশ না হয়, এমন নির্দেশনা ছিল। তবু এই নীরবতার মধ্যেও আমি সত্যের জন্য লড়াই চালিয়ে গেছি, কারণ সত্যের স্পিরিটকে দমিয়ে রাখা যায় না। তিনি বলেন, এই অন্ধকার সময়ের মধ্যে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের ধৈর্য্য ও সংগ্রামের মূল উৎস। মিথ্যা মামলা, কারাবাস, তাকে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করার চেষ্টা— এ সবই এক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রকাশ। তবুও তিনি কখনো নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। তার বিশ্বাস, সব মানুষের অধিকার সমান; ভয় দেখিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায় না। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, আমি নিজেও সেই কঠিন সময়ের সাক্ষী। আমার মা, যিনি দেশনেত্রী, তার হাতে সহ্য করেছেন ছেলেকে জেলে নেওয়া, নির্যাতনের মানসিক যন্ত্রণা। আরেক ছেলে আমরা চিরতরে হারিয়েছি। বাংলাদেশের আরও অনেক পরিবারই ছিল লক্ষ্যবস্তু। তবে ইতিহাসের সত্য হলো, কষ্ট মানুষকে সবসময় দুঃখিত করে না। কখনো কখনো কষ্ট মানুষকে মহান করে তোলে। দেশনেত্রী, আমার মা—এটাই তার প্রমাণ। তিনি দেখিয়েছেন, অন্যায় আমরা সহ্য করলেও যেন আর কারো জীবনে না আসে। দেশের পরিবর্তনের জন্য ঘৃণার পথে না গিয়ে, ন্যায়, নৈতিকতা ও ক্ষমাশীলতার পথে এগোতেই হবে, বলেন তারেক রহমান। বিএনপির এই নেতা আরও বলেছেন, আজকের বাংলাদেশের জন্য রাজনীতি ছাড়াও দরকার আরও বড় কিছু—একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ যেখানে মানবাধিকার নিশ্চিত থাকবে, যেখানে বাকস্বাধীনতা থাকবে, বিরোধী মতামতকে হুমকি হিসেবে দেখা হবে না। যেখানে ভিন্ন মতের জন্য কাউকে নিপীড়ন বা গুমের শিকার হতে হবে না। তিনি বলেন, বিএনপি আজ প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে, সমাধানের পথকে সমর্থন করে। আমরা অঙ্গীকার করছি, কোনো বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রের ভয়ে জীবন বাঁচার জন্য বাধ্য করব না, তা সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী। শেষে তারেক রহমান বলেন, ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মানবাধিকারই মানুষকে জীবনযাপনের মৌলিক শর্ত। আমরা আবরার ফাহাদ, মুশতাক আহমেদ, ইলিয়াস আলী, সাজেদুল ইসলাম সুমন, সাগর-রুনি ও অসংখ্য শহীদের কথা স্মরণ করি, যেন ভবিষ্যতে এমন নিপীড়ন ও দায়মুক্তি আর কখনো না ঘটে।


প্রিন্ট
ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

বিএনপি মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেছে, কিন্তু ভেঙে যায়নি: তারেক রহমান

আপডেট সময় ০২:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান উল্লেখ করেছেন, বিএনপি গভীর ক্ষতি সহ্য করলেও কখনো ভেঙে পড়েনি। বরং সত্য, ন্যায়ের পথে থাকা, জবাবদিহি, পুনর্মিলন ও আইনের শাসনে আস্থা রেখে আরও শক্তিশালী হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, আমরা একটি এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের কণ্ঠ, অধিকার ও জীবন মূল্যবান; যেখানে মানবাধিকারই আমাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মানবাধিকার দিবসের উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক বার্তায় এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ষোলো বছর ধরে বাংলাদেশ যেন এক অন্ধকারের নিচে চাপা ছিল। কেউ সেই অন্ধকারের তীব্রতা অনুভব করেছে, কেউ চুপচাপ জীবন কাটিয়েছে। তবে যারা তখনকার পতিত সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তাদের জন্য এই অন্ধকার ছিল খুবই সাধারণ বিষয়। রাতে দরজায় কড়া নাড়ার মতো ঘটনা, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, ভয়াবহতা আর পরিবারগুলো অপেক্ষা করেছে তাদের প্রিয়জনদের জন্য, যারা কখনো ফিরে আসেনি, যোগ করেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, এই বোঝা বিএনপির চেয়ে বেশি কেউ বহন করেনি। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, হেফাজতে মৃত্যু, মিথ্যা মামলা— এসবের মধ্যে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বিএনপির ঘরে রক্তের ঝরনাও বেশি পড়েছে। তবে শুধু বিএনপি নয়, ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক, সাধারণ মানুষ— সবাই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছেন। মৌলিক মানবাধিকার যেমন মর্যাদা, নিরাপত্তা ও মত প্রকাশের অধিকার অনেকটাই হুমকির মুখে পড়েছিল। তিনি আরও বলেন, এই সময়গুলোতে আমি নিজেও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ২০১৫ সাল থেকে আমার কথা বলার অধিকার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেশের কোনো পত্রিকা, টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যেন আমার বক্তব্য প্রকাশ না হয়, এমন নির্দেশনা ছিল। তবু এই নীরবতার মধ্যেও আমি সত্যের জন্য লড়াই চালিয়ে গেছি, কারণ সত্যের স্পিরিটকে দমিয়ে রাখা যায় না। তিনি বলেন, এই অন্ধকার সময়ের মধ্যে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের ধৈর্য্য ও সংগ্রামের মূল উৎস। মিথ্যা মামলা, কারাবাস, তাকে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করার চেষ্টা— এ সবই এক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রকাশ। তবুও তিনি কখনো নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। তার বিশ্বাস, সব মানুষের অধিকার সমান; ভয় দেখিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায় না। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, আমি নিজেও সেই কঠিন সময়ের সাক্ষী। আমার মা, যিনি দেশনেত্রী, তার হাতে সহ্য করেছেন ছেলেকে জেলে নেওয়া, নির্যাতনের মানসিক যন্ত্রণা। আরেক ছেলে আমরা চিরতরে হারিয়েছি। বাংলাদেশের আরও অনেক পরিবারই ছিল লক্ষ্যবস্তু। তবে ইতিহাসের সত্য হলো, কষ্ট মানুষকে সবসময় দুঃখিত করে না। কখনো কখনো কষ্ট মানুষকে মহান করে তোলে। দেশনেত্রী, আমার মা—এটাই তার প্রমাণ। তিনি দেখিয়েছেন, অন্যায় আমরা সহ্য করলেও যেন আর কারো জীবনে না আসে। দেশের পরিবর্তনের জন্য ঘৃণার পথে না গিয়ে, ন্যায়, নৈতিকতা ও ক্ষমাশীলতার পথে এগোতেই হবে, বলেন তারেক রহমান। বিএনপির এই নেতা আরও বলেছেন, আজকের বাংলাদেশের জন্য রাজনীতি ছাড়াও দরকার আরও বড় কিছু—একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ যেখানে মানবাধিকার নিশ্চিত থাকবে, যেখানে বাকস্বাধীনতা থাকবে, বিরোধী মতামতকে হুমকি হিসেবে দেখা হবে না। যেখানে ভিন্ন মতের জন্য কাউকে নিপীড়ন বা গুমের শিকার হতে হবে না। তিনি বলেন, বিএনপি আজ প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে, সমাধানের পথকে সমর্থন করে। আমরা অঙ্গীকার করছি, কোনো বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রের ভয়ে জীবন বাঁচার জন্য বাধ্য করব না, তা সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী। শেষে তারেক রহমান বলেন, ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মানবাধিকারই মানুষকে জীবনযাপনের মৌলিক শর্ত। আমরা আবরার ফাহাদ, মুশতাক আহমেদ, ইলিয়াস আলী, সাজেদুল ইসলাম সুমন, সাগর-রুনি ও অসংখ্য শহীদের কথা স্মরণ করি, যেন ভবিষ্যতে এমন নিপীড়ন ও দায়মুক্তি আর কখনো না ঘটে।


প্রিন্ট