ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২
নেত্রকোনায় বসতঘরে পড়েছিল কৃষকের গলাকাটা মরদেহ
শহীদ ওসমান হাদি হত্যার তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা নেয়ার আহ্বান পরওয়ারের
দুর্ঘটনার কবলে আনসার সদস্যদের বহনকারী বাস, আহত ১১
দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে হুমকি
মবোক্রেসি কঠোর হস্তে দমন করতে: সালাহউদ্দিন আহমদ
দুই হাজার পুলিশের বলয়ে থাকবেন তারেক রহমান
মানিকগঞ্জ বিআরটিএ যেন ঘুষ-দুর্নীতির আখড়া
তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে সিইসি
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চট্টগ্রামের ভারতীয় ভিসা সেন্টার
দুই হাজার পুলিশের বলয়ে থাকবেন তারেক রহমান
- আপডেট সময় ৩ ঘন্টা আগে
- / ২ বার পড়া হয়েছে
১৭ বছরের অধিক সময় পর আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেই দিন পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় দুই হাজার সদস্য তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। এছাড়া বিএনপির নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে দলের চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) দিয়ে তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতাল ও গুলশান অ্যাভিনিউর বাসভবনের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি বাসা, অফিস এলাকা এবং চলাচলের পথেও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে ইতিমধ্যে পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ (আইজি) গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে চূড়ান্ত নিরাপত্তা পরিকল্পনা এখনো পুরোপুরি তৈরি হয়নি। সম্ভবত আগামীকাল সোমবার এর চূড়ান্ত নির্দেশনা প্রকাশ হতে পারে। সূত্র বলছে, তারেক রহমানের নিরাপত্তায় ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে মূল দায়িত্ব তারেক রহমানের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত রয়েছে বিএনপির সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ)। তারা পুলিশ ও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন। বিএনপির সূত্র বলছে, গুলশান অ্যাভিনিউয়ের বাড়িটি তারেক রহমানের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। যদি কোন কারণে সেটি পুরোপুরি প্রস্তুত না হয়, তবে তিনি তার মা খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ থাকবেন। গুলশানের ৮৬ নম্বর রোডে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে তিনি দলের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। পুলিশের সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’ ও তারেক রহমানের বাসভবন দেয়াল ঘেঁষা হওয়ায় দুটি বাড়ি ও অফিসকে একই নিরাপত্তা পরিকল্পনার আওতায় আনা হচ্ছে। বিশেষ করে বাসা ও অফিসের দূরত্ব এবং চলাচলের পথ নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র বলছে, ২৩ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে পুলিশের পাহারা শুরু হতে পারে। গোয়েন্দা পুলিশ, সাদা পোশাকের ও পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিন, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তিনশ ফিট দূরে এভারকেয়ার হাসপাতাল ও গুলশান অ্যাভিনিউর বাসভবন পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্য মোতায়েন থাকবে। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত প্রতিটি থানার এলাকায় পুলিশি নিরাপত্তা থাকবে। এ ছাড়া থাকবে পুলিশি ‘স্পেশাল এস্কর্ট’। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে স্থাপন করা হবে চেকপোস্ট। বর্তমানে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় অন্তত নয়টি চেকপোস্ট রয়েছে। এসব চেকপোস্টে ২৪ ঘণ্টায় দেড় শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। তারেক রহমানের ফেরার সময় আরও তিনটি চেকপোস্ট বাড়ানো হতে পারে গুলশান এলাকায়। বাসা ও আশপাশের এলাকায় প্রতিদিন দেড় শতাধিক পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মোতায়েন থাকবেন। বাসা থেকে কোথাও যেতে হলে বা নিরাপত্তা চাইলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। তখন পুলিশ ও গোয়েন্দাদের প্রায় তিনশো সদস্য নিরাপত্তায় যুক্ত থাকবেন। ঢাকার নিরাপত্তার জন্য বর্তমানে প্রতিদিন সাড়ে পাঁচ শ’ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়, সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার সময় দেখা যায়, গুলশান অ্যাভিনিউয়ের বাড়ির গেটে পুলিশ ও সিএসএফের সদস্যরা উপস্থিত। বাড়ির ভেতরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বাড়ির দক্ষিণ পাশে অবস্থিত ‘ফিরোজা’ নামে খালেদা জিয়ার বাসভবন। ফিরোজার গেটের সামনে ও নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও সিএসএফের সদস্যরা রয়েছেন। নতুন নির্মিত বাড়িটির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা জানান, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রওনক আলম বলেন, ‘বিভিন্ন ইউনিট একযোগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে। তবে এখনো চূড়ান্ত নির্দেশনা আসেনি। আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’ অন্যদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেশের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার পর তার নিরাপত্তার দায়িত্বে বিশেষ সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) নিয়োজিত হয়েছে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নতুন বাসায় না এলে তারেক রহমান ফিরোজায় থাকতে পারেন। যদি খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যান, তবে তার বাসায় এসএসএফের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তখন এসএসএফ, সিএসএফ ও পুলিশের সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলামকে ‘প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে তার নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে তারেক রহমানের ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, তিনি ট্রাভেল পাস পেয়েছেন এবং বিমানের টিকিটও নেওয়া আছে। তার দেশে ফেরার জন্য বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে তুলতে দলীয় নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তারেক রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের জন্য বিমানবন্দর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। গুলশান ও এভারকেয়ার হাসপাতাল পর্যন্ত নিরাপত্তা ও চলাচল নিয়ন্ত্রণের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে সম্ভাব্য অভ্যর্থনা স্থানের বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই চলছে।’
প্রিন্ট
























