ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় শহীদ ওসমান হাদির পরিবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে হাদির এক বোনের জন্য অস্ত্রের লাইসেন্স ও একজন গার্ডের নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিরাপত্তার জন্যও সার্বক্ষণিক পুলিশি নজরদারি থাকবে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া সম্মুখসারির যোদ্ধা, সমন্বয়ক, সংসদ সদস্য প্রার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন জুলাই যোদ্ধাকে গার্ড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং ব্যক্তিগত অস্ত্রের লাইসেন্সের প্রক্রিয়া চলমান। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সাবেক সরকারের উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দলের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সচিব তাসনিম জারা ও উত্তরাঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক সারজিস আলমের নাম। আরও বেশ কিছু রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য প্রার্থী গার্ড ও অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন। সূত্র জানিয়েছে, আবেদন পাওয়ার পর গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী তানভির আহমেদ রবিন ও জাফির তুহিন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদসহ অন্যদের দ্রুত গার্ড ও লাইসেন্স দেওয়া হতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় অনেক যোদ্ধা দীর্ঘদিন ধরেই প্রাণনাশের হুমকির মুখে রয়েছেন। ওসমান হাদিকে হত্যার কয়েক মাস আগে বিদেশি নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর সরকার মনে করছে, ঝুঁকিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা আরও কঠোর করা প্রয়োজন। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। যাদের বেশি ঝুঁকি রয়েছে, তাদের গার্ড নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে সবাইকে গার্ড দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ অনেক আবেদনকারী শিক্ষার্থী এবং তাদের চলাচলের ধরন অনুযায়ী গার্ডের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা সম্ভব নয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মৌখিক আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না। লিখিতভাবে যারা আবেদন করছেন, তাদের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। রোববার পর্যন্ত ১২ জন লিখিত আবেদন দাখিল করেছেন। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে একটি বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।